সুরমা নদী সুনামগঞ্জ

 সুরমা নদী সুনামগঞ্জ

বরাক নদীর মতো নাগা-মণিপুরের জল বিভাজিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় ঢাল থেকে উৎপন্ন। বরাক ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার অমলশিদ নামক স্থানে সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম বদরপুরে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দু’টি পৃথক শাখায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর উত্তর দিকের শাখাটি সুরমা নামে সুরমা প্রথমে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে পরে দক্ষিণ-পশ্চিমে সিলেট শহর অভিমুখে প্রবাহিত হয়েছে। সিলেট অতিক্রম করে এটি উত্তর-পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমে সুনামগঞ্জ শহরের দিকে ধাবিত হয়েছে। সেখান থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পরে দক্ষিণে মদনা নামক স্থানে। এখানে বরাক নদীর অপর শাখা কুশিয়ারার সাথে মিলিত হয়। এ নদীর ধারায় মেঘালয় মালভূমির দক্ষিণ থেকে নেমে আসা বিভিন্ন নদী ও স্রোতধারা মিলিত হয়েছে। পূর্ব থেকে পশ্চিমে এগুলো হলো লুভা, হরি (কুশিয়া), গোয়াই গাঙ (চেঙ্গের খাল), পাইয়ান, বোগাপানি, জাদুকাটা, সোমেশ্বরী এবং কংস। 
বর্ষা মৌসুমে সুরমা বন্যাপ্রবণ। সাধারণভাবে বন্যা মৌসুমের সময়সীমা মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। এ সময়ে নদীতে গড় পানি অপসারণের পরিমাণ ৩০,০০০ কিউসেক। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন অপসারণ রেকর্ড করা হয়েছে ৫৩.০০৮ কিউসেক (১৫ অগাস্ট ১৯৫৮) এবং ৪৮৭ কিউসেক (২১ মার্চ ১৯৫৪)। মোহনগঞ্জের দক্ষিণে সুরমা দুটি শাখায় বিভক্ত হয়েছে এবং সামান্য দুরে কংস নদী এর সাথে যুক্ত হয়। আরও দক্ষিণে মগরা নদী সুরমা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। নদীর উচ্চতর গতিপথে পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীখাতটি ধনু, মধ্যবর্তী পর্যায়ে বাউলাই এবং নিম্নতর পর্যায়ে ঘোরাউত্রা নামে পরিচিত। নদীটি নিম্নতর পর্যায়ে কুলিয়ার চরের সন্নিকটে মেঘনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বরাক নদীর দক্ষিণ শাখা কুশিয়ারা নামে মৌলভীবাজার শহরের উত্তরে মনু নদীতে পতিত হয়েছে এবং উত্তরাভিমুখী দুটি নদীখাতে বিভক্ত হয়েছে, যার একটি বিবিয়ানা এবং অপরটি পুনরায় মূলনদী বরাকের নামে পরিচিত হয়েছে। বিবিয়ানার নিম্নতর গতিপথে নাম পরিবর্তিত হয়ে কালনী নদী নামে পরিচিত হয় এবং আজমিরিগঞ্জের সন্নিকটে সুরমার সঙ্গে মিলিত হয়। বরাক নদী (পশ্চিম) ত্রিপুরা পাহাড় থেকে নেমে আসা গোপলা এবং খোয়াই-এর সঙ্গে মিলিত হয়ে মদনায় সুরমা নদীতে পতিত হয়েছে।
সুরমা নদীপ্রণালীর অধিকাংশই হাওর অববাহিকায় পতিত হয়েছে, যেখানে নিষ্কাশন রেখা স্পষ্ট এবং সুনির্ধারিত নয়। দুর্গাপুর থেকে জৈন্তিয়াপুর পর্যন্ত বিস্তৃত পর্বত পাদদেশীয় ভূমিতে অধিকাংশ স্রোতধারা ও নদীখাত বর্ষা মৌসুমে উপচে পড়া পানিতে প¬াবিত হয় এবং বিস্তৃত পানি হাওরের সাথে নদীর সংযোগ সৃষ্টি করে। হাওর অববাহিকায় ও নদীগুলি উপচে পড়ে এবং বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই হাওরগুলি পরিপূর্ণ হয় এবং মৌসুমি বৃষ্টিপাত হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে বিপুল পানি পূর্বের স্থানে অর্থাৎ নদীর মূল ধারায় ফিরে আসে।   
  কিভাবে যাওয়া যায়: দেশের যে কোন স্থান হতে নদী পথে সুরমা নদীতে আসা যায়।

No comments

Thanks

Theme images by compassandcamera. Powered by Blogger.