সোনারগাঁও - বাংলার প্রাচীন রাজধানী Sonargaon - ancient capital of Bengal
সোনারগাঁও - বাংলার প্রাচীন রাজধানী
সোনারগাঁওয়ের প্রাচীন ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ। সোনারগাঁও বাংলার মুসলিম শাসকদের অধীনে পূর্ববঙ্গের একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র। মধ্যযুগীয় নগরটির যথার্থ অবস্থান নির্দেশ করা কঠিন। বিক্ষিপ্ত নিদর্শনাদি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এটি পূর্বে মেঘনা নদী , পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদী, দক্ষিণে ধলেশ্বরী নদী ও উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বেষ্টিত একটি বিস্তৃত জনপদ ছিল।
সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর পানাম নগর - এই এলাকাটি ১৯শ শতকে সোনারগাঁওয়ের উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ীদের বাসস্থান ছিলো। এখানে কাপড় ব্যবসায়ীরা বাস করতেন। ইতিহাস প্রসিদ্ধ সোনারগাঁও বা সুবর্ণগ্রাম আজ পানাম নগরীর ধ্বংসাবশেষ এবং সর্দার বাড়ীর পুরানো একটি অট্টালিকায় আবদ্ধ হয়ে ঐতিহাসিক স্মৃতি ধারণ করছে। এখানকার সুদৃশ্য বাড়িগুলো এখন ধ্বংসের মুখে।
ঐতিহাসিক সোনারগাঁও শুধু দেড়শ বছরের পুরানো স্মৃতি বিজড়িত ধ্বংসাবশেষ নগরীই নয়, এর সাথে জড়িত আছে একটি স্বাধীন জাতির আত্ন পরিচয়ের অনুভূতি। ইতিহাসের আবহমান ধারায় অনেক চড়াই- উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে এ অনভূতি আরো সুদৃঢ় হয়েছে। সোনারগাঁও আজ এমন একটি নামে পরিণত হয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস, কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতি একযোগে প্রকাশ পাচ্ছে।
শুর, পাল, সেন ও দেব রাজাদের আমলে গোড়াপত্তন হলেও সোনারগাঁওয়ের সমৃদ্ধ এবং গৌরব উজ্জ্বল যুগের শুরু হয় ১৩৩৮ খৃষ্টাব্দে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আমল থেকে। ১৩৩৮ খৃষ্টাব্দে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করলে সোনারগাঁও স্বাধীন বাংলার রাজধানীতে পরিণত হয়। পরে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্, শের শাহ, ঈশা খাঁ পর্যায়ক্রমে সোনারগাঁওয়ে রাজত্ব করেন।
সোনারগাঁও এককালে ব্যবসায়, শিক্ষা দীক্ষায়, কৃষি, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্প ও কারুকার্যে ছিল বিশ্বেরসেরা। সোনারগাঁওয়ের মসলিন কাপড় ছিল সারা বিশ্বে সমাদৃত। কথিত যে, বাংলার প্রথম মসজিদ সোনারগাঁওয়ের গোয়ালদী গ্রামে নির্মিত হয়, যা ইতিহাসে মুসলিম উম্মার স্বাক্ষও বহন করছে। সোনারগাঁও হতে পাঞ্জাব পর্যন্ত পৃথিবীর দীর্ঘতম সড়ক, গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড শের শাহের আমলে নির্মিত হয়। এখানে রয়েছে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্ এর মাজার, রয়েছে পাঁচ পীরের দরগাহ্ সহ অসংখ্য গুনীজনের স্মৃতি।
সোনারগাঁওয়ের নামকরণ
সোনারগাঁও নামকরণের ইতিহাস রহস্যাবৃত। ডঃ আর. সি. মজুমদার ও স্যার যদুনাথ সরকার যে সুবর্ণ ভূমির কথা বলেছেন তা এ সোনারগাঁও ভূমিকেই বুঝায়। যার মাটির বর্ণ সুবর্ণ বা রক্ত বর্ণ ছিল এবং যাকে সুবর্ণ ভুক্তি কিংবা সুবর্ণ বিষয় ও বলা হত। কালিকা পুরানে প্রাচীন ব্রহ্মপুত্র তীরের অনেক স্থানের ভূমি রক্তবর্ণ বলে উল্লেক আছে। কথিত আছে যে, দেবা সুরের যুদ্ধকালে রক্তপাত হেতু মৃক্তিকা লোহিত বর্ণ ধারণ করেছিল। স্বর্ণ ভূমি থেকে সোনারগাঁও বা সুবর্ণ গ্রামের নাম করণ হতে পারে।
কারো কারো মতে, উপমহাদেশের একমাত্র ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সোনারগাঁও) থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রতিটি শিক্ষানবিস সেকালে স্বর্ণের টুকরো হিসাবে আখ্যায়িত হতেন এবং তাদের স্মরণে নামকরণ হয়েছিল সোনারগাঁও বা সুবর্ন গ্রাম। ডঃ নীহার রঞ্জন রায় তার বাঙ্গালার ইতিহাস গ্রন্থে বলেন, প্রাচীন নিম্নবংগে বা আশে পাশে কোন সোনার খনি ছিল। অথবা বুড়িগঙ্গার বা সুবর্ন গ্রামের পাশ্ববর্তী নদীগুলোতে সোনার গুঁড়ো ভেসে আসতো। এ স্বর্ণ প্রাপ্তির ফলে সুবর্ন গ্রাম বা সোনারগাঁও নামকরণ হতে পারে। কিংবদন্তী আছে যে, এখানে কোন এক সময় স্বর্ণের বৃষ্টি হয়েছিল এবং এর পর থেকে এ স্থানের নামকরণ হয়েছে সুবর্ন বা সোনারগাঁও। কথিত আছে, বাংলার বাঁর ভূইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁর স্ত্রীর নাম ছিল সোনাবিবি। এই সোনাবিবি থেকেই সোনারগাঁও এর নাম করণ হয়েছে। সোনারগাঁও নামকরণের পেছনে উপরি উল্লেখিত তথ্যাবলীর কোনটি সত্য তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
সোনারগাঁও থানা নামকরণ
সোনারগাঁও থানার পূর্বনাম ছিল বৈদ্যের বাজার থানা। বৈদ্যের বাজার থানা মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ১৯৮৩ সালে ১৩ মার্চ বৈদ্যের বাজার থানার নাম পরিবর্তন করে সোনারগাঁও থানা করা হয় যা পরবর্তীতে সোনারগাঁও উপজেলা
সোনারগাঁওয়ের প্রাচীন ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ। সোনারগাঁও বাংলার মুসলিম শাসকদের অধীনে পূর্ববঙ্গের একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র। মধ্যযুগীয় নগরটির যথার্থ অবস্থান নির্দেশ করা কঠিন। বিক্ষিপ্ত নিদর্শনাদি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এটি পূর্বে মেঘনা নদী , পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদী, দক্ষিণে ধলেশ্বরী নদী ও উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বেষ্টিত একটি বিস্তৃত জনপদ ছিল।
সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর পানাম নগর - এই এলাকাটি ১৯শ শতকে সোনারগাঁওয়ের উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ীদের বাসস্থান ছিলো। এখানে কাপড় ব্যবসায়ীরা বাস করতেন। ইতিহাস প্রসিদ্ধ সোনারগাঁও বা সুবর্ণগ্রাম আজ পানাম নগরীর ধ্বংসাবশেষ এবং সর্দার বাড়ীর পুরানো একটি অট্টালিকায় আবদ্ধ হয়ে ঐতিহাসিক স্মৃতি ধারণ করছে। এখানকার সুদৃশ্য বাড়িগুলো এখন ধ্বংসের মুখে।
ঐতিহাসিক সোনারগাঁও শুধু দেড়শ বছরের পুরানো স্মৃতি বিজড়িত ধ্বংসাবশেষ নগরীই নয়, এর সাথে জড়িত আছে একটি স্বাধীন জাতির আত্ন পরিচয়ের অনুভূতি। ইতিহাসের আবহমান ধারায় অনেক চড়াই- উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে এ অনভূতি আরো সুদৃঢ় হয়েছে। সোনারগাঁও আজ এমন একটি নামে পরিণত হয়েছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস, কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতি একযোগে প্রকাশ পাচ্ছে।
শুর, পাল, সেন ও দেব রাজাদের আমলে গোড়াপত্তন হলেও সোনারগাঁওয়ের সমৃদ্ধ এবং গৌরব উজ্জ্বল যুগের শুরু হয় ১৩৩৮ খৃষ্টাব্দে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আমল থেকে। ১৩৩৮ খৃষ্টাব্দে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করলে সোনারগাঁও স্বাধীন বাংলার রাজধানীতে পরিণত হয়। পরে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্, শের শাহ, ঈশা খাঁ পর্যায়ক্রমে সোনারগাঁওয়ে রাজত্ব করেন।
সোনারগাঁও এককালে ব্যবসায়, শিক্ষা দীক্ষায়, কৃষি, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্প ও কারুকার্যে ছিল বিশ্বেরসেরা। সোনারগাঁওয়ের মসলিন কাপড় ছিল সারা বিশ্বে সমাদৃত। কথিত যে, বাংলার প্রথম মসজিদ সোনারগাঁওয়ের গোয়ালদী গ্রামে নির্মিত হয়, যা ইতিহাসে মুসলিম উম্মার স্বাক্ষও বহন করছে। সোনারগাঁও হতে পাঞ্জাব পর্যন্ত পৃথিবীর দীর্ঘতম সড়ক, গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড শের শাহের আমলে নির্মিত হয়। এখানে রয়েছে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্ এর মাজার, রয়েছে পাঁচ পীরের দরগাহ্ সহ অসংখ্য গুনীজনের স্মৃতি।
সোনারগাঁওয়ের নামকরণ
সোনারগাঁও নামকরণের ইতিহাস রহস্যাবৃত। ডঃ আর. সি. মজুমদার ও স্যার যদুনাথ সরকার যে সুবর্ণ ভূমির কথা বলেছেন তা এ সোনারগাঁও ভূমিকেই বুঝায়। যার মাটির বর্ণ সুবর্ণ বা রক্ত বর্ণ ছিল এবং যাকে সুবর্ণ ভুক্তি কিংবা সুবর্ণ বিষয় ও বলা হত। কালিকা পুরানে প্রাচীন ব্রহ্মপুত্র তীরের অনেক স্থানের ভূমি রক্তবর্ণ বলে উল্লেক আছে। কথিত আছে যে, দেবা সুরের যুদ্ধকালে রক্তপাত হেতু মৃক্তিকা লোহিত বর্ণ ধারণ করেছিল। স্বর্ণ ভূমি থেকে সোনারগাঁও বা সুবর্ণ গ্রামের নাম করণ হতে পারে।
কারো কারো মতে, উপমহাদেশের একমাত্র ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (সোনারগাঁও) থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রতিটি শিক্ষানবিস সেকালে স্বর্ণের টুকরো হিসাবে আখ্যায়িত হতেন এবং তাদের স্মরণে নামকরণ হয়েছিল সোনারগাঁও বা সুবর্ন গ্রাম। ডঃ নীহার রঞ্জন রায় তার বাঙ্গালার ইতিহাস গ্রন্থে বলেন, প্রাচীন নিম্নবংগে বা আশে পাশে কোন সোনার খনি ছিল। অথবা বুড়িগঙ্গার বা সুবর্ন গ্রামের পাশ্ববর্তী নদীগুলোতে সোনার গুঁড়ো ভেসে আসতো। এ স্বর্ণ প্রাপ্তির ফলে সুবর্ন গ্রাম বা সোনারগাঁও নামকরণ হতে পারে। কিংবদন্তী আছে যে, এখানে কোন এক সময় স্বর্ণের বৃষ্টি হয়েছিল এবং এর পর থেকে এ স্থানের নামকরণ হয়েছে সুবর্ন বা সোনারগাঁও। কথিত আছে, বাংলার বাঁর ভূইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁর স্ত্রীর নাম ছিল সোনাবিবি। এই সোনাবিবি থেকেই সোনারগাঁও এর নাম করণ হয়েছে। সোনারগাঁও নামকরণের পেছনে উপরি উল্লেখিত তথ্যাবলীর কোনটি সত্য তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
সোনারগাঁও থানা নামকরণ
সোনারগাঁও থানার পূর্বনাম ছিল বৈদ্যের বাজার থানা। বৈদ্যের বাজার থানা মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ১৯৮৩ সালে ১৩ মার্চ বৈদ্যের বাজার থানার নাম পরিবর্তন করে সোনারগাঁও থানা করা হয় যা পরবর্তীতে সোনারগাঁও উপজেলা
No comments
Thanks